সংসারতো আর চলেনা! - Slogaan BD

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

সংসারতো আর চলেনা!

একের পর এক চাপ এসে ভর করছে দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের ওপর। সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের খরচ আরও বাড়ছে। ধনী শ্রেণীর কথা বলা হচ্ছেনা কারণ তাদের দ্রব্যমূল্য ও গ্যাস পানি বিদ্যুৎ এর মূল্য বৃদ্ধিতে কোন প্রভাব পড়েনা জীবনযাত্রায়। এমনিতে গত কয়েক মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রধান পণ্যগুলোর দাম বেড়েছে। চালের দাম বাড়ানো হয়েছে কয়েক দফা। বেড়েছে চিনি, ভোজ্যতেল, ডাল, পেঁয়াজ ও রসুনের দাম। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতিও হঠাৎ লাফ দিয়েছে। সব মিলিয়ে মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষ যখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে, তখনই বিদ্যুৎ ও ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বাড়াল সরকার।

দেশে আবারও বাড়ল বিদ্যুতের দাম। মার্চ থেকে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে ইউনিটপ্রতি ৩৬ পয়সা বেশি দিতে হবে। বৃহস্পতিবার গ্রাহক (খুচরা) পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানোয় বিলের সঙ্গে অতিরিক্ত এ ৩৬ পয়সা যোগ হবে। ১ মার্চ থেকে কার্যকর হবে নতুন দাম।

এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির দামও ফের বাড়াল। ঢাকা ওয়াসার প্রতি হাজার লিটার পানি আবাসিকে ২.৮৯ টাকা ও বাণিজ্যিকে ২.৯৬ টাকা বেড়েছে। আর চট্টগ্রামে আবাসিকে ২.৪৮ টাকা এবং বাণিজ্যিকে ২.৭৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে বর্তমান সরকারের সময়ে কয়েক দফায় দাম বাড়ল গুরুত্বপূর্ণ এ পণ্য দুটির।

শহর এলাকায় একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের মাসে ভ্যাট ছাড়া বিদ্যুৎ বিল দিতে হতো ২ হাজার ৪৩৩ টাকা। এ ধরনের গ্রাহকের আগামী এপ্রিল থেকে ১৩৩ টাকা বাড়তি দিতে হবে। তাদের এখন দিতে হবে ২ হাজার ৫৬৬ টাকা। এতে লাইফ লাইন (হতদরিদ্রদের জন্য সর্বনিম্ন হার) ছাড়া ছয়টি ধাপে আবাসিক গ্রাহকের সর্বনিম্ন ১৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৫৬১ টাকা পর্যন্ত বিদ্যুতের বিল বাড়বে। আবাসিক ছাড়া কৃষি, শিল্পসহ সব ধরনের বিদ্যুতের দাম বেড়েছে গড়ে ইউনিটপ্রতি ৩৬ পয়সা। বৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এ নিয়ে গত ১০ বছরে আটবার খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলো।

নতুন বিদ্যুতের বিল কার্যকর হবে মার্চ থেকে। আর গ্রাহককে দিতে হবে মার্চ মাসের বিল এপ্রিল মাসে। তবে যেসব গ্রাহকের প্রিপেইড মিটার রয়েছে, তাদের মার্চ মাস থেকে বিদ্যুতের বিল নতুন দামে দিতে হবে। এর আগে সবশেষ ২০১৭ সালের নভেম্বরে পাইকারি বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়েছিল সরকার, যা ওই বছর ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়। এ নিয়ে গত ১০ বছরে ৮ বার খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ল।

বিদ্যুতের এই দাম বাড়ার প্রভাব কেবল বাসাবাড়িতে পড়বে তা নয়, কৃষি ও শিল্পপণ্যের উৎপাদন খরচও এতে বৃদ্ধি পাবে। উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরাও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তে হতাশার কথা জানিয়েছেন। এমনিতে সামগ্রিক অর্থনীতি চাপের মধ্যে রয়েছে। বেশির ভাগ সূচকই নিম্নগামী। বিশ্ব অর্থনীতিও মন্দার আশঙ্কায়। কমে যাচ্ছে সামগ্রিক চাহিদা। এ রকম এক সময়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কতটা সময়োপযোগী, এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন উদ্যোক্তারা।   

এদিকে ঢাকা ওয়াসার বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রতি এক হাজার লিটার পানির অভিকর আবাসিকে ১১.৫৭ টাকার স্থলে ১৪.৪৬ টাকা এবং বাণিজ্যিকে ৩৭.০৪ টাকার স্থলে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পানির বাড়তি দাম আগামী ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।

বিদ্যুতের দাম বাড়ার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি,  সিপিবি, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ আটটি বাম দলের সমন্বয়ে গঠিত বাম গণতান্ত্রিক জোট। জোটটি বলেছে, সরকারের ভুল নীতি, দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে বারবার বিদ্যুতের বাড়াতে হচ্ছে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কারণে বাড়িভাড়া, গাড়িভাড়া সহ জিনিসপত্রের দাম বাড়বে।

বাংলাদেশ ন্যাপ, খেলাফত মজলিসসহ বিভিন্ন সংগঠন বিদ্যুতের দাম বাড়ার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.

Post Top Ad

{SCOpenGraph image=http://site.com/link-to-homepage-image.jpg}