![]() |
চুলে তাপ প্রয়োগ করলে, বারবার রং করলে, রিবন্ডিংয়ের পর যত্ন না নিলে চুলের স্বাস্থ্য নষ্ট হয়। দীর্ঘসময় রোদে থাকলে, গোসলের সময় খুব ঠান্ডা বা খুব গরম পানি ব্যবহার করলে চুলের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। তাই যত্ন করতে হয় নিয়মিত। সঠিক নিয়মও মানতে হয়। নয়তো খুব দ্রুতই চুলের কিউটিকল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিউটিকল হলো চুলের সবচেয়ে উপরিভাগের আবরণ। এই অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ধীরে ধীরে পুরো চুল ভাঁজে ভাঁজে নষ্ট হয়ে যায়। আগা ফেটে ঝরে যায় চুল।
ক্ষতিগ্রস্ত চুলের যত্ন নেবেন যেভাবে
ক্ষতিগ্রস্ত চুলের তারুণ্য ফেরাতে কিছু বিষয় মানতে হবে। প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে। খাদ্যতালিকায় প্রোটিন জাতীয় খাবার, রঙিন শাকসবজি, স্বাস্থ্যকর চর্বি রাখতে হবে। এগুলো চুলকে ময়েশ্চারাইজ রাখবে, চুলে পুষ্টি যোগাবে বলে জানান শিওর সেল মেডিকেলের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তাওহীদা রহমান ইরিন।
ইরিন জানান, কিউটিকল ক্ষতিগ্রস্ত হলে চুল তার স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারায়। কারণ চুলের পোর খুলে যায়। চুল ময়েশ্চারাইজ রাখতে মাইল্ড ক্লিনজার, হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। কন্ডিশনার, মাস্ক ব্যবহার ছাড়াও চুলে তেল মালিশের মাধ্যমে কিউটিকলের সৌন্দর্য ফেরানো যায়।
চুল সতেজ রাখতে আমন্ড-জোজোবা-ক্যাস্টর অয়েল মালিশ করা যেতে পারে। সাধারণত তেল দুই ধরনের হয়। যেমন ক্যারিয়ার অয়েল ও এসেনশিয়াল অয়েল। ক্যারিয়ার অয়েল যেমন নারকেল তেল, আমন্ড তেল সরাসরি চুলে দেওয়া যায়। এসেনশিয়াল অয়েল (যেমন ক্যাস্টর অয়েল) ক্যারিয়ার অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতে হয়। চুলে সুন্দরভাবে ম্যাসাজ করে, আঁচড়িয়ে শ্যাম্পু করে ফেললে চুল সুন্দর থাকে।
কন্ডিশনার ব্যবহার করলে চুলের গোড়ার এক ইঞ্চি দূরে থেকে ব্যবহার করতে হবে। হেয়ার প্যাক বা মাস্ক চুলের গোড়াসহ পুরো চুলে ব্যবহার করে ২০ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলতে পারেন।
নিম, কোকোনাট অয়েল বা কোকোনাট মিল্ক মাস্ক চুলের জন্য ভালো। কোকোনাট মিল্ক মাস্ক চুলের আগা ফাটা রোধ করবে, কিউটিকল ভালো রাখবে। অলিভ অয়েল, পাকা কলার মাস্ক ব্যবহার করলেও চুল ভালো থাকবে।
মধুর সঙ্গে দুধ মিশিয়ে মাথার ত্বক ও পুরো চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এটি আধা ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে নিন। এই প্যাক চুলের গোড়া পরিষ্কার করে চুলকে করবে প্রাণবন্ত।
কলার সঙ্গে মেয়নেজ মিশিয়েও প্যাক তৈরি করতে পারেন। এটি দশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। কলায় আছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং মেয়নেজে আছে ফ্যাটি অ্যাসিড। এগুলো চুলকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
আপনাদের জন্যে রয়েছে ৪ টি পরামর্শ
১. কন্ডিশনার
চুলে কন্ডিশনার ব্যবহারের সময় শেষভাগ অর্থাৎ আগার দিকে বেশি গুরুত্ব দিন। আর চুলের ক্ষতি কমাতে শ্যাম্পুর পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
২. শ্যাম্পু
শ্যাম্পু করার আগে জট ছাড়াতে অবশ্যই চুল আঁচড়ে নেবেন। চুলে শ্যাম্পু করার সময় আগার দিকে শ্যাম্পু কম ব্যবহার করুন। কারণ, চুলের আগা এমনিতেই একটু শুষ্ক থাকে। আর চুলের আগায় বেশি শ্যাম্পু ব্যবহার করলে চুল রুক্ষ হয়ে যায়।
৩. ট্রিম
চুলের ক্ষতি কমাতে নিয়মিত চুলে ট্রিম করুন। অন্য কথায় বলতে গেলে, মাঝেমধ্যেই চুলের আগা কাটুন। চুলের আগা ফেটে গেলে চুল বাড়তে অসুবিধা হয়।
৪. গরম তেলের ম্যাসাজ
চুলের ক্ষতি কমাতে তেল হালকা গরম করে ম্যাসাজ করুন। নারকেল বা কাঠবাদাম যে তেল আপনার পছন্দ, সেটিই ব্যবহার করুন। তেলের ম্যাসাজ মাথার তালুর রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এ ছাড়া চুলের রুক্ষতা প্রতিরোধে করতে পারেন হেয়ার স্পা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন