লাল গোলাপ অজানা ইতিহাস । কিভাবে ভালবাসার প্রতীক - Slogaan BD

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

লাল গোলাপ অজানা ইতিহাস । কিভাবে ভালবাসার প্রতীক


প্রিয় ফুল কী? অধিকাংশ মানুষের উত্তর হবে, গোলাপ। কারণ, প্রিয়জনকে শুভেচ্ছা জানাতে কিংবা ভালোবাসা প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম এই গোলাপ। প্রাচীনকাল থেকেই তাই গোলাপ সবার প্রিয় একটি ফুল। প্রিয় মানুষটি অভিমান করে আছে, কোনোভাবেই তার সেই অভিমান ভাঙাতে পারছেন না? তাহলেও তার হাতে একটি গোলাপ তুলে দিতে পারেন। দেখবেন সব নিমিষে সব অভিমান পালিয়ে গেছে।


প্রতিবছর ৭ ফেব্রুয়ারি রোজ ডে পালনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় ভালোবাসার সপ্তাহ। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় দিবসগুলো। আর এই দিবসগুলো উপলক্ষে বিশ্বব্যাপী ফুলের বিশেষ করে গোলাপের চাহিদা চরম আকারে বেড়ে যায়। লাল রং এর অন্যান্য অনেক ফুল থাকলেও দিবসগুলো উপলক্ষে লাল গোলাপের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। লাল গোলাপকে বিবেচনা করা হয় ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে।


গোলাপ দিবস কীভাবে উদযাপন শুরু হয়েছিল তা নিয়ে খুব কম তথ্য জানা যায়। তবে, গোলাপ দিবস দিয়ে ভ্যালেন্টাইন'স সপ্তাহ শুরু হয়। গোলাপ চাষের ইতিহাসও বেশ প্রাচীন। প্রায় ৫ হাজার আগে প্রথম প্রাচ্যে গোলাপের চাষ করা হয়। বৃহৎ আকারে গোলাপ চাষ শুরু হয় চীনে। সেখান থেকে দ্রুত রোম ও গ্রিসে ছড়িয়ে পড়ে।


শুরুতে গোলাপকে বিলাসবহুল ফুল হিসেবে ভাবা হতো এবং ধনীরা ব্যবহার করতেন। তবে, ধীরে ধীরে সব মানুষের পছন্দের ফুল হয়ে ওঠে। গোলাপ আশা, শান্তি এবং ভালবাসার প্রতীক হিসেব পরিচিত। গোলাপ সত্যিই ভালোবাসার প্রতীক। তাই আপনি বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, আপনার প্রিয়জনকে গোলাপ উপহার দিয়ে ভালোবাসার বার্তা পৌঁছে দিন।


কিন্তু শুধুমাত্র লাল গোলাপকেই কেন ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই ইতিহাস জানতে হলে  ফিরে যেতে হবে যুগে যুগে । প্রাচীন গ্রীসে প্রেম, সৌন্দর্যের গ্রীক দেবীর নাম ছিল অ্যাফ্রোদিতি। রোমানরা আবার তাকে ভালোবাসার দেবী ভেনাস নামেও ডাকত। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, অ্যাফ্রোদিতির সৌন্দর্য এতটাই ছিল যে তিনি যেখানেই হাঁটতেন সেখানেই গোলাপ ফুটে উঠত। ফলস্বরূপ, লাল গোলাপ প্রেম এবং আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হয়ে ওঠে।


রোমান পৌরাণিক কাহিনীতে অ্যাফ্রোদিতি অর্থাৎ ভালোবাসার দেবী ভেনাস তার প্রেমিক অ্যাডোনিসকে খুব ভালোবাসতো। অ্যাডোনিসকে হত্যার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক করতে দৌড়ানোর সময় একটি কাঁটাঝোপের মধ্য দিয়ে পায়ের গোড়ালি কেটে ফেলে ভেনাস। তার রক্ত ​​তখন যেখানেই স্পর্শ করত সেখানেই লাল গোলাপ প্রস্ফুটিত হচ্ছিল। আর তাই রোমানরা বিশ্বাস করতেন যে গোলাপ হল দেবী ভেনাসের ফুল।


এ ছাড়া রোমান যুগে গোলাপ জনপ্রিয় ছিল কারণ তখন ঔষধি, পারফিউম এবং বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হত। মধ্যযুগে, রোজ ডে প্রেমিকদের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম হয়ে ওঠে। নাইটরা তাঁদের সঙ্গিনীদের আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে গোলাপ উপহার দিতেন।


১৪ এবং ১৫ শতকে, ভ্যালেন্টাইনস ডে আরও বাণিজ্যিক হয়ে ওঠে কারণ ব্যবসায়ীরা ছুটি উদযাপনের জন্য কার্ড, ফুল এবং অন্যান্য উপহার বিক্রি করতে শুরু করে। লাল গোলাপ তখন ভালোবাসা ও আবেগের প্রতীক হিসেবে বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৭ শতকের ইংল্যান্ডে, রোজ ডে হয়ে ওঠে ছুটির দিন। এই দিনটিতে বিশেষ করে রোমান্টিক কবিতা এবং গান চর্চা হত।


রানি ভিক্টোরিয়ার যুগে প্রেমিক-প্রেমিকারা ভালোবাসা প্রকাশের জন্য পরস্পরকে লাল গোলাপ উপহার দিতেন। কথিত আছে মোগল সম্রাজ্ঞী নুরজাহান নিজেও লাল গোলাপ পছন্দ করতেন। তাঁকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন মোগল সম্রাট জাহাঙ্গির। তিনি তাঁর বেগমকে খুশি রাখতে প্রতিদিন একটন তাজা গোলাপ নুরজাহানকে পাঠাতেন।


প্রচলিত আছে, ভিক্টোরিয়ানরা তাদের মনের কথা প্রিয়জনকে জানাতে গোলাপ বিনিময় শুরু করেছিলেন। তবে, যেভাবেই শুরু হোক না কেন- প্রিয়জনকে লাল, গোলাপি, হলুদ, কমলা, সাদা, ল্যাভেন্ডার কিংবা নীল গোলাপ দিতে পারেন। মনে রাখবেন প্রতিটি গোলাপ ভিন্ন আবেগের প্রতীক।


ভ্যালেন্টাইনস সপ্তাহ শুরু হয় রোজ ডে বা গোলাপ দিবস দিয়ে। ত গোলাপ লাল, গোলাপি, হলুদ, কমলা, সাদা বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে এবং প্রতিটি গোলাপের আলাদা অর্থ আছে...

সাদা গোলাপ– ক্ষমা চাওয়ার প্রতীক।

কমলা গোলাপ– পছন্দ জানানোর প্রতীক।

হলুদ গোলাপ– বন্ধুত্বের প্রতীক।

গোলাপি গোলাপ– সেরা বন্ধুত্বের প্রতীক।

লাল গোলাপ– ভালোবাসার প্রতীক

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.

Post Top Ad

{SCOpenGraph image=http://site.com/link-to-homepage-image.jpg}