গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে ঝুঁকি ও সাবধানতা - Slogaan BD

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে ঝুঁকি ও সাবধানতা

 নতুন অনেক আবাসিক ও অফিস ভবন রয়েছে যেখানে গ্যাস সংযোগ না থাকায় সিলিন্ডার গ্যাসই  ভরসা। তবে এই সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহারের ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

শুধু সিলিন্ডার ভালো হলেও গ্যাস লিক হতে পারে যদি এর পাইপ, রেগুলেটর খারাপ মানের হয়। এখানে বাজারে ভালো খারাপ দুই মানের যন্ত্রাংশই আছে। কিন্তু গ্রামের দরিদ্র মানুষ অনেক সময় বাধ্য হয়ে কমদামের মানহীন পণ্য কেনে। আবার অনেকে না জেনেই নিম্নমানের পণ্য ব্যবহার করছেন। এতেই বিপত্তি ঘটে।


এক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে সতর্ক হওয়ার বিশেষ করে সিলিন্ডারটি টানা হেঁচড়া করে, ধাক্কা দিয়ে, মাটিতে গড়ানো যাবে না।

বাংলাদেশের এলপিজি বিধিমালা, সিলিন্ডার বিধিমালা এবং বিস্ফোরণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে আরও কিছু সতর্কতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হল:

এলপিজি সিলিন্ডার খাড়াভাবে দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে। উপুড় বা কাত করে রাখা যাবে না। এমনভাবে রাখতে হবে যেন আশেপাশে কোন কিছুর সাথে ধাক্কা না লাগে।

সিলিন্ডার কোন পাটাতনের ওপরে নয় বরং মাটিতে সমতল পৃষ্ঠে রাখতে হবে এবং চুলা, সিলিন্ডার থেকে কমপক্ষে ছয় ইঞ্চি উপরে রাখতে হবে।

সিলিন্ডার কোনভাবেই চুলার/আগুনের খুব কাছাকাছি রাখা যাবে না। সিলিন্ডারটি লম্বা পাইপের সাহায্যে চুলা থেকে অন্তত তিন ফুট দূরে স্থাপন করতে হবে।

সিলিন্ডার রান্নাঘরের চুলার নিচে, ক্যাবিনেটের ভেতরে কিংবা বদ্ধ অবস্থায় নয় বরং খোলামেলা জায়গায় এবং সমান ভূমিতে রাখতে হবে। যেখানে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করে। তবে সরাসরি সূর্যের নিচে রাখা যাবে না। ছায়া যুক্ত শুষ্ক পরিচ্ছন্ন স্থানে রাখতে হবে।

সিলিন্ডার যেখানে থাকবে সেখানকার একটি জানালা সব সময় খোলা রাখার চেষ্টা করতে হবে। না হলে ঘরের ওপরে ও নিচে পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করতে হবে।

গ্যাস সিলিন্ডার পরিবর্তনের সময় অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যেন চুলা চালু না থাকে।

আগুন, বিদ্যুৎ এবং তাপের যেকোনো রকম উৎস সেইসঙ্গে দাহ্য, প্রজ্বলিত বা বিস্ফোরক পদার্থ এবং ভিন্ন কোন গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে এই এলপিজি সিলিন্ডার দূরে রাখতে হবে।

যেখানে সিলিন্ডার রাখা হচ্ছে তার আশেপাশে আগুন জ্বালানো, ধূমপান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

সিলিন্ডারের ওপরে ভারী বোঝা রাখা যাবে না।

রান্না শুরু করার আধাঘণ্টা আগে রান্নাঘরের দরজা-জানালা খুলে দিন। রান্না শেষে চুলার নব ও এলপিজি সিলিন্ডারের রেগুলেটর সুইচ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।

অনেকদিনের বদ্ধ ঘরে প্রবেশের পর সবার আগে দরজা জানালা খুলে দিতে হবে। যদি ঘরের ভেতরে গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যায় তাহলে জানালা দরজা খুলে দিয়ে সাথে সাথে ডিলারদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে ম্যাচের কাঠি জ্বালানো, ইলেকট্রিক সুইচ, সিলিন্ডারের রেগুলেটর কিংবা মোবাইল ফোন অন বা অফ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অনেকে সিলিন্ডারে লিকেজ খোঁজার সময় মোমবাতি কিংবা ম্যাচের কাঠি ব্যবহার করেন। সেটা কোন অবস্থাতেই করা যাবে না।

অতিরিক্ত গ্যাস বের করার জন্য এলপিজি সিলিন্ডারে চাপ দেয়া, ঝাঁকানো কিংবা সিলিন্ডার গরম করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এতে তরল এলপিজি দ্রুত গ্যাসে রূপান্তরিত হয়ে অস্বাভাবিক চাপ বেড়ে বিস্ফোরিত হতে পারে।

এলপিজি পূর্ণ সিলিন্ডার কোন দুই চাকার যান যেমন সাইকেল মোটর সাইকেলে কিংবা ভারসাম্য কম, এমন বাহনে পরিবহন করা যাবে না।

এছাড়া বছরে অন্তত একবার গ্যাস সিলিন্ডারটি এবং এর সাথে ব্যবহার হওয়া নানা রকম সামগ্রীর নিয়মিত ডিস্ট্রিবিউটর বা সরবরাহকারী দিয়ে সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।

সিলিন্ডারের ভালভ, গ্যাসের পাইপ বা ফিটিংস দুর্বল হলে কিংবা সিলিন্ডারে ছিদ্র থাকলে সেটা সাথে সাথে বদলে ফেলতে হবে। একে মেরামত, ঝালাই করে ব্যবহার করা যাবে না।

গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে বাঁচতে কিছু বিষয় মেনে চলা জরুরি। আসুন জেনে নেই গ্যাস বিস্ফোরণ থেকে বাঁচতে কী করবেন।  

রান্নার পর চুলা বন্ধ রাখুন

রান্নার কাজ শেষ হলে চুলা বন্ধ রাখতে হবে। এতে একদিকে গ্যাসের অপচয় রোধ হবে অন্যদিকে বিস্ফোরণের ঝুঁকি কমবে।

সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহারগ্যাসের পাইপ লাইন পরিষ্কার করতে সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার বিপদজ্জনক। তাই পাইপ পরিষ্কার করতে কখনো এসব জিনিস ব্যবহার করা যাবে না। পাইপ যদি অতিরিক্ত ময়লা হয়ে থাকে তবে পরিষ্কার করতে শুকনো কাপড় বা হালকা ভেজা কাপড় ব্যবহার করতে পারেন।পাইপ বদলে ফেলুন

পাইপ লাইনে কোনো লিক বা ফুটো থাকলে অবশ্যই তা বদলে ফেলতে হবে। এছাড়া পাইপের গায়ে কোনো কাপড় বা প্লাস্টিক দিয়ে মুড়িয়ে রাখবেন না। এতে বিস্ফোরণের শঙ্কা বাড়ে।

গ্যাসের রেগুলেটর

গ্যাসের রেগুলেটরের নল ভালো করে পাইপ দিয়ে ঢেকে রাখুন। গ্যাস বন্ধ করে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় দেখে নিন গ্যাসের পাইপ গরম বার্নারের গায়ে লেগে আছে কি? যদি থাকে সরিয়ে দিন।

গ্যাসের গন্ধ

ঘরে ঢুকেই যদি গ্যাসের গন্ধ পান তবে ফ্যান বা সুইচ বোর্ড বা বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম চালু করবেন না। এতে গ্যাস মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পুরো ঘরে আগুন ধরে যাবে। গ্যাস বেরিয়ে যাচ্ছে এমন মনে হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন।  

সেফটি ক্যাপ

বিস্ফোরণ থেকে নিরাপদ থাকতে সেফটি ক্যাপ ব্যবহার জরুরি। রান্না শেষে সিলিন্ডারের মুখ ঢেকে রাখুন সেফটি ক্যাপে।

যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাসা, বিশেষ করে রান্নাঘরের মধ্যে নিরাপত্তামূলক বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি, যেমন- গ্যাস ডিটেক্টর এবং ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার কিংবা হাতের কাছে কম্বলের মতো মোটা কাপড় রাখা যেতে পারে।


-BBC Bangla, Jugantor

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.

Post Top Ad

{SCOpenGraph image=http://site.com/link-to-homepage-image.jpg}