দয়া করে বেসরকারি চাকরিজীবীদের কথাও ভাবুন - Slogaan BD

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

দয়া করে বেসরকারি চাকরিজীবীদের কথাও ভাবুন

মানুষকে জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে কাজ করতে হয়। কেউ সরকারি চাকরি করে, কেউ বেসরকারি। সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা খুব কম, বেশিরভাগই বেসরকারি। কিন্তু সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবীর সুযোগ-সুবিধার পার্থক্য আকাশ-পাতাল।

বেসরকারি চাকরিজীবীরা অনেক ক্ষেত্রেই অবহেলিত ও বঞ্চিত। অন্যদিকে দফায় দফায় বেড়েছে সরকারি চাকরিজীবীদের সুবিধা। কিছু সুবিধার কথা তুলে ধরছি। আপনি জেনে আশ্চর্য  হবেন গত নয় বছরে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বেড়েছে ৩৫০ শতাংশ।

২০০৯ সালে সরকারি চাকরির ন্যূনতম বেতন ছিল বেসিক ২৪০০ টাকা। বর্তমানে তা হয়েছে ৮২০০ টাকা। আগে সরকারি সাপ্তাহিক ছুটি ছিল একদিন। এখন তা দুই দিন।

গাড়ি কেনার জন্য আগে বরাদ্দ থাকত না। এখন বরাদ্দ রয়েছে ৩০ লাখ টাকা। বাড়ি কেনার জন্য আগে ঋণের ব্যবস্থা ছিল না। এখন রয়েছে ৭৫ লাখ টাকা। পেনশন আগে ছিল ৮০ পার্সেন্ট। এখন ৯০ পার্সেন্ট। আগে বৈশাখী ভাতা ছিল না। এখন রয়েছে মূল বেতনের ২০ শতাংশ। আগে সামান্যই পদোন্নতি হতো। এখন ব্যাপকভাবে হচ্ছে।

মোবাইল কেনার জন্য ২০০৯ সালে বরাদ্দ ছিল ১৫,০০০ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৭৫,০০০ টাকা (১ম গ্রেডের জন্য)। এছাড়া এখন সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করতে সরকারের অনুমতির দরকার হয়, আগে যা লাগত না। আরও অনেক সুবিধা বাড়ানোর কাজ চলমান আছে।

অন্যদিকে যারা বেসরকারি চাকরি করছেন, তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়। যুগোপযোগী সুবিধা তো দূরের কথা, অধিকাংশ কোম্পানিতে এইচআর নীতিমালা নেই। যে যেমন ইচ্ছা বেতন দেয়।

অল্পকিছু কোম্পানি, যার ৯০ ভাগই বিদেশি, তারা কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা দেয়। তাদের সুবিধা-অসুবিধা দেখে। দেশি এফএমসিজি কোম্পানিগুলোতে যাচ্ছেতাই অবস্থা। ঈদ ছাড়া বন্ধ নেই। সারা বছর কাজ করায় তারা।

মানুষ নয়, তাদের কাছে সেলসের লোককে মেশিন মনে হয়। অনেক কোম্পানিতেই বেতন নিয়মিত নয়। প্রভিডেন্ট ফান্ড নেই, বীমা সুবিধা নেই। যখন-তখন চাকরি চলে যায়, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয় না।

এসব দেখার যেন কেউ নেই। স্যুট-টাই পরা ভদ্রলোক দেখে মনে হয় কতই না সুখী; কিন্তু বেসরকারি এই চাকরিজীবীদের মনে কত যে দুঃখ, কত যে না পাওয়ার কষ্ট, তার খবর আমরা কেউ জানি না। তাদের বেতন থেকে সরকার ট্যাক্স কেটে রাখে। অথচ তাদের কথা ভাবা হয় না।

বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নীতিমালা না থাকার সুযোগে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বেচ্ছাচারী মনোভাব দেখিয়ে থাকে। কর্মীদের বছরের পর বছর এক বেতনে কাজ করতে বাধ্য করা হয় অনেক প্রতিষ্ঠানে। বাধ্য হয়ে সব মেনে কাজও করতে হয় ভূক্তভোগীদের। 

এসব চাকুরীজীবীদের জীবনযাপন ব্যয় মেটাতে সমস্যা হয়না যদি প্রতি বছর দৈনন্দিন ব্যয় বৃদ্ধি ও খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যদি তাদের আয়ও বাড়ে। 

বেসরকারি চাকরিজীবীরা রেভেনিউ জেনারেট করে, তবে সুবিধা ভোগ করে অন্যরা। সরকারের কাছে আবেদন, একটা বোর্ড গঠন করা হোক। তারা কোম্পানিগুলো ভিজিট করুক। কর্মকর্তাদের ন্যায্য সুবিধা-অসুবিধা দেখুক। সরকার তো সবার।

আজকে খেটে খাওয়া দিন আনা মজুর কিংবা উচ্চ মধ্যবিত্তদের এত চাপ নেই যতটা চাপ নিম্ন আয় বিশেষ করে বেসরকারী চাকরীজীবীদের সামলাতে হচ্ছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জই হলো খেয়ে হোক না খেয়ে হোক আত্মমর্যাদা ও সামাজিক অবস্থানের খাতিরে ৮০ শতাংশ আয়ের ব্যয় করতে হয় এর পেছনে। আয় বাড়াতে তারা না পাড়ছে উপরে উঠতে না পাড়ছে নিচে নামতে। মুষ্টিমেয় কিছু শ্রেণীর মানুষ স্রোতে গা ভাসিয়ে অবৈধ আয়ের পথে চলে যায় ব্যয় সামলাতে না পেরে। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষের পক্ষে তা করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। 

সাবেক অর্থমন্ত্রী বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য পেনশন ব্যবস্থা চালুর কথা বলেছিলেন ২ বছর হলো। আশা আর হতাশার দোলাচলেই কি দুলতে থাকবে দেশের বৃহৎ এই কর্ম  চালিকাশক্তি?

এই প্রেক্ষিতে ফেসবুক গ্রূপ খোলা হয়েছে প্রতিকার প্রত্যাশীদের জন্য। আগ্রহীগণ গ্রূপে এড হতে চাইলে:
 https://www.facebook.com/groups/1033342993663795

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.

Post Top Ad

{SCOpenGraph image=http://site.com/link-to-homepage-image.jpg}