রসুনকে অনেকেই বলে থাকেন ‘পাওয়ার হাউস অব মেডিসিন অ্যান্ড ফ্লেভার’। রসুনের বিকল্প হিসেবে নতুন একটি ফসলের জাত উদ্ভাবন করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) এক অধ্যাপক। উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক এএফএম জামাল উদ্দিনের উদ্ভাবিত এ নতুন জাতটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিডি নিরা’। সম্প্রতি নতুন এ জাতটির নিবন্ধন দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় বীজ বোর্ড।
যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিডি নিরা’ বা (SAU Garlic Chive 1). এরই মধ্যে জাতটির নিবন্ধন দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় বীজ বোর্ড। শেকৃবি উদ্যানতত্ত্ব মাঠে গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) যৌথ উদ্যোগে।
এ বিষয়ে ড. জামালউদ্দিন ইত্তেফাককে বলেন, ‘বিডি নিরা’ মূলত এটি জাপানি ফসল। কয়েকটি জাত নিয়ে আমি কাজ শুরু করি এবং দেশীয় আবহাওয়ায় এটিকে অভিযোজন করাতে সক্ষম হয়েছি। স্বাদ ও পুষ্টিতে অনেকটাই রসুনের মতো। এটিকে সরাসরি রসুনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
বিডি নিরার পাতা ভাজি খুবই সুস্বাদু। এটি প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন সি, ক্যারোটিন ও ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ হওয়ায় ডায়াবিটিস, দেহের কোলস্টেরলের মাত্রা ও হূদরোগের আশঙ্কা কমিয়ে দেবে। দেশে বিডি নিরাকে শাক হিসেবে পরিচিত করান যেতে পারে। বাংলাদেশে চাষ উপযোগী এই ফসল বাজারে রসুনের দাম বেড়ে গেলে বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব।’
চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিডি নিরা চাষে সাধারণ রসুনের চেয়ে বেশি লাভ হবে। ফসলটি বীজ ও বাল্ব (কন্দ) থেকে বংশবৃদ্ধি করে। বাল্ব রোপণ করা হলে ৩০-৩৫ দিনের মধ্যেই ফলন আসবে। পরবর্তীতে ১৫ দিন পরপর শাক বা পাতা সংগ্রহ করা যাবে। একটি বাল্ব থেকেই বছরে ১২ থেকে ১৩ বার ফসল পাওয়া সম্ভব। প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ১৫০-২০০ গ্রাম শাক পাওয়া যাবে। শাক কেটে নেওয়ার পর আবার ওখান থেকেই ফসল হবে এবং বাল্বের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে। এতে কৃষক একসঙ্গে বাল্ব ও ফসল দুটোই পাবেন।’
ফসলটিকে মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতি শুক্রবার ক্যাম্পাসে 90 Minute Schooling প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা কৃষকের কাছে বিনামূল্যে এর উত্পাদন প্রক্রিয়া শিখিয়ে দিচ্ছি। আশা করছি আগামী দুই-এক বছরের মধ্যেই এটি মাঠপর্যায়ে পৌঁছে দিতে সক্ষম হব। যে কেউ চাইলে আমাদের কাছ থেকে বীজ ও বাল্ব নিতে পারবে।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন