ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবের মাধ্যমে অনেকেই তারকাখ্যাতি অর্জনে পিছিয়ে নেই শিশুরাও। এ রকমই একজন শিশু অ্যানাস্তাশিয়া রাডজিন্সকায়া। ফোর্বসের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ২০১৯ সালের সর্বোচ্চ অর্থ উপার্জনকারী ইউটিউব তারকার তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে পাঁচ বছরের এ শিশু। সেলিব্রাল পালসি রোগকে সঙ্গী করে অ্যানাস্তাশিয়া জন্মগ্রহণ করে দক্ষিণ রাশিয়ায়। জন্মের পর অ্যানাস্তাশিয়া কখনো কথা বলতে পারবে না বলে চিকিৎসকরা সাফ জানিয়ে দিয়েছিল। পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের অ্যানাস্তাশিয়ার অবস্থার অগ্রগতি সম্পর্কে জানাতে তার বাবা-মা প্রতিদিন ইউটিউবে তাকে নিয়ে অনেক ভিডিও পোস্ট করতেন। বাবার সঙ্গে, বিড়ালের সঙ্গে খেলা করা, পাহাড়ের চারপাশে ঘুরাঘুরি—ভিডিওগুলোর সঙ্গে আকর্ষণীয় জিঙ্গেল ও গিগলস যুক্ত করে সেগুলো ইউটিউবে ছাড়া হতো। এসব ভিডিও পোস্ট করার কারণে দ্রুত সারা বিশ্বেই অ্যানাস্তাশিয়ার অসংখ্য ফলোয়ার তৈরি হয়।
২০১৮ সালে অ্যানাস্তাশিয়া তার বাবার সঙ্গে পেটিং চিড়িয়াখানায় ঘুরতে যায়। সেখানে শিশুদের পছন্দের ‘বেবি শার্ক’ গানের সঙ্গে তাদের নাচের, গরুর দুধ দহন ও আইসক্রিম খাওয়ানোর ভিডিও ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয়। ভিডিওটি প্রায় ৭৬৭ মিলিয়ন ভিউয়ার দেখেছিল, যা ক্রমবর্ধমান মিডিয়া ব্যবসায় দারুণ ভূমিকা রাখে। ২০১৮ সালের ১ জুন থেকে ২০১৯-এর ১ জুন পর্যন্ত পাঁচ বছরের এ শিশু প্রায় ১৮ মিলিয়ন ইউএস মার্কিন ডলার আয় করে। অ্যানাস্তাশিয়া ‘নাস্তিয়া’ নামেই বেশি পরিচিত। বর্তমানে তার সাতটি চ্যানেলজুড়ে প্রায় ১ হাজার ৭০ লাখ (১০৭ মিলিয়ন) গ্রাহক রয়েছেন, যারা তার ভিডিও প্রায় ৪ হাজার ২০০ কোটিবার দেখেছেন।
ইউটিউবের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করলেও এরই মধ্যে ছোট্ট অ্যানাস্তাশিয়া প্ল্যান বি সম্পর্কে ভাবা শুরু করেছে। সে একজন ডলফিন প্রশিক্ষক এবং বিড়ালের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে।
তবে অর্থ উপার্জনের দিক থেকে অ্যানাস্তাশিয়া আট বছরের রায়ান কাজীকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। চলতি বছরের সর্বাধিক উপার্জনকারী ইউটিউবারের তালিকায় রায়ান কাজী শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। তার আয়ের পরিমাণ ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার। তার ইউটিউব চ্যানেলের নাম রায়ানস ওয়ার্ল্ড। তবে এটি রায়ানস টয়রিভিউ নামে পরিচিত। চ্যানেলটির ভিডিওতে নতুন খেলনার সঙ্গে রায়ানের খেলার ভিডিও আপলোড করা হয়।
ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ইয়োলার সিইও ইয়াল বাওমেল বলেন, ‘ইউটিউব হলো বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় বেবিসিটার। নাস্তিয়াসহ অনেক ডিজিটাল তারকাকে এটি দক্ষ করে তোলে।’
এ বছর করা পিউ রিসার্চ সেন্টারের সমীক্ষায় দেখা যায়, শিশুদের করা ভিডিওগুলো অন্যান্য ভিডিওর তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি দেখা হয়। পিউ রিসার্চ সেন্টারের প্রকাশিত আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৮১ শতাংশ বাবা-মা ১১ বা তার চেয়ে কম বয়সী শিশুদের ইউটিউব দেখতে দেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন