'বাকপটু মুনাফিক' সম্পর্কে ইসলাম কি বলে? - Slogaan BD

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

'বাকপটু মুনাফিক' সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

কোনো মানুষ সৃষ্টিগতভাবে চালাক-চতুর হতেই পারে; কিন্তু তা যদি ব্যবহৃত হয় অন্যকে অন্যায়ভাবে বিপদে ফেলে দেওয়ার জন্য, তা ওই মানুষের জন্য অভিশাপ হয়ে ওঠে।
আজকাল ‘ম্যানেজ’ করে চলতে পারা, ‘ভাঁজ’ দিয়ে থাকতে পারা, ন্যায়নীতি ও আদর্শ বিসর্জন দিয়ে কর্তা ও বসের মনোভাব উদ্ধার করে চলা, নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য অপরকে কৌশলে প্রতারণায় ফেলা ইত্যাদিকে ‘বুদ্ধিমত্তা’, ‘দূরদর্শিতা’ ও ‘বিচক্ষণতা’ ভাবা হয়। অথচ এই অতি চালাক মানুষগুলোকে হাদিসের ভাষায় বাকপটু মুনাফিক বলা হয়েছে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘উম্মতের ব্যাপারে আমার যে বিষয়গুলোকে ভয় হয়, তন্মধ্যে ভয়ংকর হচ্ছে বাকপটু মুনাফিক।’ (মুসনাদে আহমদ, ১/২২)
রাসুলুল্লাহ (সা.) এমন মানুষদের অভিশাপ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘অভিশপ্ত সে, যে কোনো মুমিনের ক্ষতি করে অথবা তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪০)
কারণ এ ধরনের লোকজন খুবই ভয়ংকর হয়। তারা হাসিমুখে যেকোনো সময় যে কারো বাঁশি বাজিয়ে দেয়। তাই পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ এসব মুনাফিকের সঙ্গে নয়, বরং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকতে বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকো।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ১১৯)
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ মুনাফিকের পরিচয় এভাবে দিয়েছেন, ‘তারা মুখে তোমাদের সন্তুষ্ট রাখে; কিন্তু তাদের হৃদয় তা অস্বীকার করে।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৮) অর্থাৎ মুনাফিকের সব সময় মুখে এক, অন্তরে আরেক থাকবে। পবিত্র হাদিস শরিফে মুনাফিকের পরিচয় দিতে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, মুনাফিকের চিহ্ন তিনটি। (১) যখন কথা বলে, মিথ্যা বলে। (২) যখন অঙ্গীকার করে, ভঙ্গ করে। (৩) আর যখন তার কাছে কোনো আমানত রাখা হয়, সে তার খিয়ানত করে। (বুখারি, হাদিস : ৩৩)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, চারটি স্বভাব যার মধ্যে পাওয়া যাবে, সে খাঁটি মুনাফিক এবং যার মধ্যে তার একটি দেখা যাবে তার মধ্যে মুনাফিকের একটি স্বভাব থাকবে, যে পর্যন্ত না সে তা পরিহার করবে—(১) যখন তার কাছে কোনো আমানত রাখা হয়, সে তা খিয়ানত করে; (২) যখন কথা বলে, মিথ্যা বলে; (৩) যখন অঙ্গীকার করে, ভঙ্গ করে এবং (৪) যখন কারো সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ করে তখন সে অশ্লীলভাষী হয় (অশ্লীল গালমন্দ করে)। (মিশকাত, হাদিস : ৫৬)
তাই নিজের অবস্থানকে পাকাপোক্ত করার জন্য কিংবা সামান্য কিছু অর্থের জন্য এ ধরনের কাজে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ বাহ্যিকভাবে যদিও মনে হবে যে এসব কাজ করলেই নিজের ক্ষমতা বেড়ে যাচ্ছে; কিন্তু বাস্তবে মহান আল্লাহর কাছে এ ধরনের লোক নিকৃষ্ট থেকে নিকৃষ্ট অবস্থানে চলে যাচ্ছে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ হলো দুমুখো মানুষ। এর কাছে আসে এক চেহারায়, ওর কাছে যায় আরেক চেহারায়। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৮০৬৯)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.

Post Top Ad

{SCOpenGraph image=http://site.com/link-to-homepage-image.jpg}