অকার্যকর মশার ওষুধ: দুর্নীতির সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলুন - Slogaan BD

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

অকার্যকর মশার ওষুধ: দুর্নীতির সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলুন

ডেঙ্গুজ্বরের জীবাণুবাহক এডিস মশা নিধনে অকার্যকর ওষুধ ক্রয়ে রাজধানীর দুই সিটির শক্তিশালী সিন্ডিকেট সক্রিয়।
জানা গেছে, দেড় দশক আগে অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে প্রভাবশালীদের আশীর্বাদপুষ্ট একটি সিন্ডিকেট মশার ওষুধের মূল্যের ৫০ শতাংশ কমে দরপত্র জমা দিয়ে কাজ বাগিয়ে নেয় সিন্ডিকেটভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান।
তবে ২০১৮ সালে ওষুধের মান পরীক্ষা করা হলে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভুক্ত করে। আশ্চর্যজনক হল, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন কালো তালিকাভুক্ত করলেও প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ওষুধ সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে।
এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর.বি)-এর পরীক্ষায় মশা নিধনের ওষুধ অকার্যকর মর্মে প্রকাশিত প্রতিবেদনও আমলে নেয়নি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।
সুবিধাভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও জনগণের ভোটে নির্বাচিত মেয়রকেও কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে ক্রমাগত সাফাই গাইতে দেখা গেছে। এর পেছনে রহস্য কী, তা দ্রুত উদ্ঘাটন করা উচিত।
বিগত ১৮ বছর ধরে মশার ওষুধ নিয়ে দুই ঢাকা সিটি কর্পোরেশন, বিশেষ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে দুর্নীতির যে ডালপালা বিস্তার লাভ করেছে, সাধারণ মানুষকে জীবন দিয়ে তার দায় শোধ করতে হচ্ছে।
ইতিমধ্যে রাজধানীসহ দেশের অন্তত ৬২ জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ডেঙ্গুজ্বরে অক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে অন্তত দেড় হাজার মানুষ। এ রোগে সরকারি হিসাবে মারা গেছেন ৫ জন।
বেসরকারি হিসাব অনুযায়ী আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা এর অন্তত কয়েকগুণ বেশি হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা শনাক্তের শুরু থেকেই যদি কার্যকর ওষুধের মাধ্যমে এদের বংশবৃদ্ধি ও বিস্তার রোধের ব্যবস্থা করা যেত, তাহলে আজ পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ হয়ে উঠত না।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়। কয়েক বছর আগে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে মেয়রসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটের অভিযোগ করা হয়েছিল।
বলা হয়েছিল, মেয়রের যোগসাজশে একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি চক্র টেন্ডারবাজি, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয়, রাজস্ব আদায়, বিলবোর্ডের মাধ্যমে প্রাপ্ত আয়, হাটবাজার ইজারার মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থসহ বিভিন্ন খাতে অর্জিত আয়ের একটি অংশ পকেটস্থ করেছে।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে দুর্নীতির যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছিল ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে, তার কোনো হেরফের তো ঘটেইনি, বরং দুর্নীতির আরও বিস্তার ঘটেছে, যার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে এত বছর অকার্যকর মশার ওষুধ প্রয়োগের মধ্য দিয়ে।
এমনিতেই ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে দেশের মানুষ ব্যাপক ক্ষতি ও দুর্ভোগের শিকার হয়েছে, তার ওপর দেশজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে ডেঙ্গুজ্বর।
রাজধানীতে মশক নিধনে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও অকার্যকর ওষুধ প্রয়োগের ফলে তা কোনো কাজে আসেনি- এ সত্য উপলব্ধি করে দুই সিটি কর্পোরেশন অতিদ্রুত মশা নিধনে শতভাগ কার্যকর ওষুধ আমদানির পদক্ষেপ নেবেন, এটাই প্রত্যাশা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.

Post Top Ad

{SCOpenGraph image=http://site.com/link-to-homepage-image.jpg}